নিজস্ব প্রতিবেদক
নরসিংদীর মাধবদী পৌরসভার আনন্দী এলাকায় শশুর বাড়ির লোকজনের নির্যাতনের শিকার গৃহবধু দুই সন্তানের জননী কল্পনা রানী বাসফোঁড় (২৫) আত্মহত্যার প্ররোচনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবীতে শনিবার (৫ জুন) দুপুরে কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত দুই শতাধিক হরিজন সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠী মানববন্ধন করেছেন।
এ ব্যাপারে নরসিংদী আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
নরসিংদী প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে দুপুর ১২টা থেকে ঘন্টাকালব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচী পালনকালে বক্তারা বলেন, আমরা হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন দেশের মানুষকে সুন্দর পরিবেশে রাখতে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করে জীবিকা নির্বাহী করে থাকি। সমাজের দৃষ্টিতে আমরা নিম্ন শ্রেণির লোক বলে কি কোন বিচার পাব না ?
কল্পনা নিজ ইচ্ছায় আত্মহত্যা করেনি। তাকে প্রতিনিয়ত নির্যাতনের মাধ্যমে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়েছে। স্বামীর যৌতুক দাবী ও শশুরবাড়ির চরম নির্যাতনে অতিষ্ট কল্পনা রানীকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন আর না ঘটে সেজন্যই আমরা হত্যায় প্ররোচনাকারী স্বামী রাজু বাসফোঁড়, পিতা নন্দলাল বাসফোঁড়সহ অন্যান্য আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।
নিহত কল্পনা রানীর পিতা কুমিল্লার বাসিন্দা মনা লাল বাসফোঁড় বলেন, মোটা অংকের যৌতুক না দেয়ায় স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকজনের নির্যাতনে অগ্নিদগ্ধ হয়ে গত ৮মে-২০২১ ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ন ইন্সটিটিউট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় আমার মেয়ে কল্পনা।আগুনে তার শরীরের ৯৬ভাগ পুরে গিয়েছিল। আমি অপরাধীদের সর্বোচ্চ বিচার দাবী করছি বাংলাদেশ সরকারের নিকট।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন,নিহত কল্পনার বাবা মনালাল বাস্ফোড়,সিলেট হরিজন গোস্ঠীর সভাপতি সুজন লাল, বি বাড়িয়া শাখার সভাপতি রাজেস হরিজন,কুমিল্লা শাখার সা. সম্পাদক নিমাই হরিজন,মৌলভীবাজার শাখার সভাপতি গোলাপ হরিজন,কুমিল্লা শাখার সভাপতি জামাল হরিজন,কল্পনার মা রিতা রানী হরিজন,মামী পূজা রানী বাস্ফোড়,কুলাউরা শাখার সভাপতি লস্কর বাস্ফোর প্রমুখ।
উল্লেখ্য, তিন বছর আগে নরসিংদীর মাধবদী থানা এলাকার আনন্দী বর্ষা টেক্সটাইল মিল সংলগ্ন হরিজন কলোনীর রাজু বাসফোঁড় এর সাথে কুমিল্লা জেলা শহরের আদর্শ সদর উপজেলার সুজানগর সুইপার কলোনীর মনা লাল বাসফোঁড়ের সুন্দরী কন্যা কল্পনা রানী বাসফোঁড়ের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে বার বার যৌতুক দাবী করে আসছিল কল্পনার স্বামী,শশুর,শাশুরী সহ ওই পরিবারের লোকজন।