(নরসিংদী): নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলার একজন মানব সেবা প্রিয় মানুষ আব্দুল কাদির মোল্লা তিনি নরসিংদীর জেলার বিভিন্ন স্থানে মসজিদ মাদ্রাসা হাই স্কুল কলেজে নিজস্ব অর্থায়নে যে সকল স্থাপনা করেছেন তা নজির বিহীন। বাংলাদেশে এমন আরেকটি মানুষ জন্ম হবে কিনা তা আমার প্রশ্ন।আমার জানামতে নরসিংদীর সুশীল সমাজ থেকে এমন কোন সমাজ নেই যে তার অর্থের সুবিধা গ্রহণ করেনি এমন ব্যক্তি খুব কমই পাওয়া যাবে । আজকে যারা ওনার অপপ্রচারে আছেন তারা একদিন ঠিকই উনার কোলে বসে খেয়ে পড়ে গেছেন যা আমাদের দেখা।
কেউ চিত্ত নিয়ে পৃথিবীতে আসে, বিত্ত থাকে না। আবার কেউ বিত্ত জন্ম নিলেও, চিত্ত থাকে না। ক্ষমতা-মমতার এই সমতা স্রষ্টার অবদান। যিনি চিত্ত -বিত্ত দুটোই গড়ছেন। তিনি আব্দুল কাদির মোল্লা। যার হৃদয়ে রয়েছে মমতা আর হাতে রয়েছে ক্ষমতা।
আব্দুল কাদির মোল্লা নরসিংদী জেলার মনোহরদী থানার পাঁচকান্দি গ্রামে ১৯৬১ সালের ৮ই আগষ্ট জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আব্দুল মজিদ মোল্লা আর মাতা নূরজাহান বেগম। ১৯৭৪ সালে ৮ম শ্রেণীতে থাকা অবস্থায় বাবার মৃত্যু হয়। দ্রারিদ্রতার কষাঘাতেও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত চালিয়ে যান লেখাপড়া। মাত্র ৩৬০টাকার জন্য দেওয়া হয়নি এইচএসসি পরীক্ষা।
নিজেকে তৈরী করতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে তাঁর। জীবন সংগ্রামের শুরুর দিকে কারিগরি শিক্ষা নিয়ে পাড়ি জমান সিঙ্গাপুর। পাঁচবছর পর দেশে ফিরে এসে চাকুরী করেন তিতাস গ্যাস কোম্পানিতে। এরপর প্রতিষ্ঠা করেন থার্মেক্স গ্রুপ। যা আজ দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান।
মানবতার মূর্ত প্রতীক, শিক্ষানুরাগী, দানবীর থার্মেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ও পরিচালক জনাব আব্দুল কাদির মোল্লা। নরসিংদীকে বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মধ্যে আদর্শিক জেলা, নৈতিক জেলা, শিক্ষানগরী হিসেবে পরিচিত করার লক্ষ্যে `মানুষ মানুষের জন্য, সেবাই আমাদের অঙ্গীকার’ এই মিশন এন্ড ভিশন নিয়ে গড়ে তোলেন পিতার নামে মজিদ মোল্লা ফাউন্ডেশন।
ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হতে আয়ের লভ্যাংশের ২৫% ব্যায় করেন মানবকল্যাণে। দক্ষ মানব সম্পদ গড়ার ভিশন নিয়ে ১৯৯৫ সালে নিজ গ্রামে প্রতিষ্ঠা করেন ‘পাঁচকান্দি ডিগ্রী কলেজ’। ২০০৬ সালে নরসিংদী শহরে প্রতিষ্ঠা করেন নিজের নামে আব্দুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজ যা শুরু থেকেই বাজিমাত। পরপর তিনবার দেশের মধ্যে ২য় স্থান। এর ধারাবাহিকতায় প্রতিষ্ঠা করেন স্ত্রীর নামে এনকেএম হাই স্কুল এন্ড হোমস ও আব্দুল কাদির মোল্লা ইন্টারন্যাশনাল স্কুল। এই প্রতিষ্ঠান চারটি মজিদ মোল্লা ফাউন্ডেশন কর্তৃক সরাসরিভাবে পরিচালিত।
এছাড়াও নরসিংদী জেলার ১৫১ টি স্কুল, ৫৭টি কলেজে অবকাঠামো নির্মাণ করেছেন। অনেক স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসাতেও অবকাঠামো নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। ৮৫টা এতিমখানা তার অনুদানে পরিচালিত হয়ে আসছে। ৩১৫টা স্কুলে মজিদ মোল্লা ফাউন্ডেশন এর এফডিআর রয়েছে। যা থেকে খণ্ডকালীন শিক্ষকদের বেতনসহ উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড ব্যয় করা হয়। যার অর্থায়নে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এর ১ম ছাত্রহল (নির্মাণাধীন); ঢাকা , জাহাঙ্গীরনগর, চট্টগ্রাম, জগন্নাথসহ অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে থার্মেক্স গ্রুপের দেয়া বাস আছে। শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়েও ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মসজিদ নির্মাণ কাজ চলছে।
নরসিংদীর জেলায় গড়ে তোলেন অসংখ্য মসজিদ। এর মধ্যে অন্যতম বেলাবো জামে মসজিদ। এতে ১২,০০০ মানুষ একসাথে নামাজ পড়তে পারেন। সম্প্রতি এফডিসিতেও মসজিদ নির্মাণ করে দেবার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
প্রচারবিমুখ কাজে বিশ্বাসী আব্দুল কাদির মোল্লা। ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১৮ ঘন্টাই কাজ করেন তিনি। প্রতি সপ্তাহে শনিবার দিন তিনি চিকিৎসা সেবা, কন্যাদায়গ্রস্ত পিতামাতাকে সহায়তা, বেকার যুবকদের অল্প পুঁজি দিয়ে ব্যবসায় সহায়তা, রিকশা-ভ্যান দিয়ে সহায়তা, বিধবা নারীদের সেলাই মেশিন,আবাসন ব্যবস্থা, টিউবওয়েল ইত্যাদি দিয়ে সহায়তা করে থাকেন।
উল্লেখ্য যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞানে পড়ুয়া সাবেক ছাত্রীর ব্রোনম্যারো ক্যান্সার হলে তিনি তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। মেয়েটি সুস্থ হয়ে এখন সহকারী ভূমি কমিশনার।
বিশিষ্ট সাংবাদিক ড.আবদুল হাই সিদ্দীকী বলেন, একজন মানুষ যখন সত্যিকারের মানুষ হন, তখন তিনি একটি গ্রাম, উপজেলা বা জেলার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেন না। আমাদের আব্দুল কাদির মোল্লা তেমনি একজন সত্যিকারের মানুষ।
বর্তমানে কর্মবীর আব্দুল কাদির মোল্লা নরসিংদীতে মেডিকেল কলেজ, কারিগরি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। মানবসেবায় অসামান্য অবদান রাখায় ‘মাদার তেরেসাঁ অ্যাওয়ার্ড ’-২০১৮ পেয়েছেন। দেশসেরা করদাতা- ২০১৫ নির্বাচিত হয়েছেন। তাকে কর বাহাদুর উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে।
জনপ্রিয় কন্ঠ শিল্পী নকুল কুমার বিশ্বাসের সুরে, আমি গাইবো এই গান। তুমি এ যুগের হাজি মুহসীন দানবীর অতি মহান। নরসিংদীতে এই যে ছুটেছে উন্নয়নের বাণ। যেদিকে তাকাই সেদিকে তোমার অবদান। দিয়ে যাও শুধু, নাও না কিছু দানের প্রতিদান। তুমি এ যুগের হাজী মুহসীন, দানবীর অতি মহান।
তুমি না আসিতে পাঁচকান্দির মাটিতে কে করিতো এমনিভাবে শিক্ষার আলো দান। কে রাখিতো উন্নয়ন, শুনাইতো মানুষকে ভালোবাসার গান। এই সমাজে যারা আজও দরিদ্র নিরন্ন, তোমার জন্ম হয়েছে সেই দুঃখীদের জন্য। তুমি মানবতার মূর্ত প্রতীক, পিতা তোমার রত্মধারক, রত্নগর্ভা মা। এই বাংলাদেশে তুমি শুধু তোমার তুলনা। তুমি শতবছরের শ্রেষ্ঠ, দৈনিক আমাদের বাংলা পরিবারের পক্ষ থেকে তোমায় জানাই সম্মান।