নরসিংদী প্রতিনিধিঃ
নরসিংদী সাটিরপাড়া এলাকায় হোসেন বাজারের সামনে প্রকাশ্যে ইসলাম মিয়া (৫৬) হত্যা মামলার বাদী নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় সাটিরপাড়া মহল্লার চৈতাল পাড়া এলাকায় বাদীর নিজ বাড়ীতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ইসলাম হত্যা মামলার বাদী ইয়াসমিন বেগমের স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত ইসলামের বড় ছেলের বৌ ও মৃত মাসুমের স্ত্রী বকুল বেগম, তিনি বলেন, আজ নিরুপায় হয়ে শোকাভিভূত অবস্থায় আপনাদের কাছে শরণাপন্ন হলাম এবং সংবাদ সন্মেলন করতে বাধ্য হলাম। আপনারা জানেন যে, গত ১ জুলাই বুধবার সন্ধ্যায় সাটিরপাড়া হোসেন বাজারে প্রকাশ্যে আমার বাবাকে কুপিয়ে নির্মম ভাবে হত্যা করে। আমার বাবাকে হত্যার করার একটাই কারণ তারা এলাকার ত্রাস সৃষ্টি করা , আপনারা আরও জানেন আমার স্বামী মাসুমকে গত ১৯ নভেম্বর ২০১১ সালে সন্ত্রাসী খুনি হেলাল ( হেলাল ডাকাত)সহ তার সঙ্গীয় সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে হত্যা করে। উক্ত মামলার বাদী ছিল আমার মা মৃত নিলুফা বেগম, নরসিংদী মডেল থানা যাহার মামলার নম্বর- ২৮ ধারা ৩০২/৩৪। বর্তমানে মামলাটি কোর্টে বিচারধীন আছে। উক্ত মামলার আসামীরা দীর্ঘদিন যাবত জেল খেটে জামিনে বের হয়ে হেলাল, সনেট, শূট্যার সুমন গং মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য আমার বাবা ও আমাদের পরিবারকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিলো। এতে আমরা কর্ণপাত না করায় গত ১ জুলাই সন্ধ্যায় উক্ত সন্ত্রাসী, মাদক কারবারি ও খুনিরা আমার বাবাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে খুন করে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজনের মুখে সন্ত্রাসীদের নাম,ঠিকানা, পিতার নাম জানিয়ে গত ৩ জুলাই শনিবার নরসিংদী মডেল থানায় আমি একটি হত্যা মামলার এজহার দায়ের করলে থানা পুলিশ ৪ জনকে এবং গত ৭ জুলাই জেলা ডিবি পুলিশ আরও ৫ জনকে অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেফতার করেন।
এই খবর সারাদেশে ছড়িয়ে পড়লে উক্ত গ্রেফতারকৃত সন্ত্রাসীদের পরিবারের লোকজন আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের হুমকি- ধমকি দিচ্ছে। এর ফলে আমিসহ আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি, প্রশাসনের নিকট আকুল আবেদন তারা যেন আমার বাবার হত্যাকারীদের দ্রুত ফাঁসি কার্যকর করা হয়, আপনারা জাতির বিবেক, সত্য তুলে ধরাই আপনাদের কাজ। দুঃখের বিষয় এসব কুচক্রী মহল আপনাদেরকে ভূল তথ্য দিয়ে এবং সামাজিক যোগাযোগ এর মাধ্যমে আমার বাবার বিরুদ্ধে ভূল তথ্য প্রচার করছে। আমার বাবা সন্ত্রাসী হেলাল, সনেট গংদের হাতে নিহত মৃত ইসলাম মিয়া (৫৬) নাকি মাদক ব্যবসা করতো এবং মাদকের ভাগবাটোয়ারা নিয়ে ইসলাম মিয়া খুন হন। আসলে এই তথ্যটি যারা প্রচার করেছেন, তা আজও সত্য নয়। মিথ্যা, বানোয়াট গুজব প্রকৃত সত্য হলো যে, আমার বাবা মাদকতো দূরের কথা কোনদিন ধূমপান পর্যন্ত করেননি। তিনি সবসময় মাদক ও ধূমপানমুক্ত জীবনযাপন করতেন। তিনি চেয়ে ছিলেন বকুলতলা মহল্লা হবে মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত। এর জন্যই কাল হলো আমার বাবা। যারা আমার বাবাকে খুন করেছে তারাই এলাকায় মাদকবিস্তার করে মাদক বিক্রি করতো। যারা আমার বাবাকে মাদক বিক্রেতা ও মাদকের ভাগবাটোয়ারা এসব মিথ্যা, গুজব, অসত্য সংবাদ প্রচার করেছেন বা প্রচারণা চালিয়েছে, আমি এসব মিথ্যা সংবাদদের প্রতি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে আমি ও আমার পরিবার এর নিরাপত্তা চাচ্ছি এবং আবারও আমার বাবার খুনিদের ফাঁসি চাই। এসময় তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন, অস্ত্র সিক্ত কন্ঠে বারবার বলতে থাকেন যারা আমার বাবাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে আমরা তাদের ফাঁসি চাই, আর কোন মায়ের বুক যেন খালি না হয় হা, আর কোনো স্ত্রী স্বামীহারা না হয়, এভাবে বাবা ও বড় ভাইকে হারিয়ে আজ আমরা অসহায় ও মানবতার জীবন যাপন করছি।