শনিবার, ২৭ Jul ২০২৪, ০৬:২৭ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :
নরসিংদীতে ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের মাঝে চেক বিতরণ নরসিংদী বেলাবতে ব্যবসায়ীর বাড়িতে হামলা,প্রায় ২০ লক্ষ টাকার ক্ষতি শিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-এর. পক্ষ থেকে এমপিকে উষ্ণ সংবর্ধনা পলাশে তিন বছরের শিশু মাইশার লাস উদ্ধার আটক ৩ নরসিংদী জেলা শিবপুর উপজেলায় সরকারি ইটের সলিং রাস্তা উঠিয়ে ফেলেছে দুষ্কৃতকারীরা বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক সংসদ সদস্য অকুতোভয় রাজনীতিক প্রখ্যাত সাংবাদিক কামাল হায়দার স্মরণে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত এশাআতে দ্বীন নু্রানী তালিমূল কোরআন ক্যাডেট মাদ্রাসার কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে পু্রুষ্কার বিতরণ লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলাও করতে হবে……… আলহাজ্ব মোঃ সামসুল ইসলাম মোল্লা নরসিংদীর শিবপুর সাব রেজিস্ট্রার নেই ..হতাশায় গ্রাহক চিত্রশিল্পী আল-আমীনের আঁকা ছবি গুলো সংরক্ষণের প্রয়োজন
১০ বছরেও শেষ হলো না সেই ৪৮ ঘণ্টা

১০ বছরেও শেষ হলো না সেই ৪৮ ঘণ্টা

ডেস্ক রিপোট:

সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত লোহার সিন্দুকে ভরে রাখা হয়েছে। সিন্দুকের কোনো চাবিও নেই। কেউ সেটা খুলতেও পারছে না। সিন্দুকের মধ্যে হত্যা তদন্ত আটকে আছে। কত ঘটনাই তদন্ত করল র‍্যাব। অথচ এটা তদন্ত করতে পারছে না। তদন্তের অপেক্ষা করতে করতে রুনির মা তো চলেই গেল। এবার আমার পালা। আমি কি এই হত্যার তদন্ত রিপোর্ট দেখে যেতে পারব?’— ১০ বছরেও সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি খুনের রহস্য বের না হওয়ায় সাগর সারওয়ারের মা সালেহা মনির বৃহস্পতিবার এসব কথা বলেন।

বয়সের ভারে সালেহা মনিরের শরীরে নানা অসুখ বাসা বেঁধেছে। ১০ বছর ধরে পুত্র শোকে শরীর তার ভেঙে পড়েছে। বিছানায় শয্যাশায়ী। অন্যদিকে হত্যার তদন্ত রিপোর্টের অপেক্ষা করতে করতে রুনির মা নূরুন্নাহার মির্জা গত ৫ জানুযারি ইন্তেকাল করেন। সালেহা মনিরের একটাই প্রশ্ন, তদন্ত রিপোর্ট কি এতই ভারী যে রিপোর্ট দাখিল করতে ৮৫ বার সময় পেছাতে হয়? ছেলের হত্যার খুনিকে কি দেখতে পারব না?

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর রাজাবাজারের নিজ বাসায় নৃশংসভাবে খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনি। এ ঘটনায় রুনির ছোট ভাই নওশের রোমান বাদী হয়ে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর তত্কালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বলেছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনি ধরা পড়বে। সেই ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে ১০ বছর হয়ে গেল। এ ঘটনার এখনো কোনো কূলকিনারা হলো না।

দায়ের করা মামলাটির প্রথমে তদন্ত করেন শেরেবাংলা নগর থানার একজন কর্মকর্তা। ঐ বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্তভার পড়ে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) উত্তরের পুলিশ পরিদর্শক মো. রবিউল আলমের ওপর। তবে এর দুই মাস পর হাইকোর্টের আদেশে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় র‍্যাবকে। সেই থেকে ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো মামলার দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি। এখনো আসামি শনাক্তকরণ, জব্দকৃত আলামত পরীক্ষা ও নিহতদের খোয়া যাওয়া ল্যাপটপ উদ্ধারের পর্যায়েই আটকে আছে তদন্ত। যদিও র‍্যাবের পক্ষ থেকে বরাবরের মতো দাবি করা হচ্ছে, মামলার দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু অতীতের মতো এ বিষয়ে কোনো প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি সংস্হাটি। উল্টো ৮৫ বার পেছানো হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ। ফলে নিহতদের স্বজনদের প্রশ্ন, ৪৮ ঘণ্টা ১০ বছরেও শেষ হলো না। আর কবে খুনিরা ধরা পরবে। কবে রহস্যের জট খুলবে?

সর্বশেষ গত ২৪ জানুয়ারি এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু প্রতিবেদন দাখিল না করে আবারও সময় চান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি নিয়ে ঢাকা মহানগর হাকিম তরিকুল ইসলাম আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নতুন দিন ধার্য করে দেন। এই নিয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৮৫ বার সময় পেলেন তদন্ত কর্মকর্তা।

নিহত সাংবাদিক দম্পতির একমাত্র ছেলে মাহীর সারোয়ার মেঘের বয়স এখন সাড়ে ১৫ বছর। মেঘ এখন ক্রিকেট খেলছে অনূর্ধ্ব-১৬ ক্রিকেট টিমে। সিরাজগঞ্জে অনুষ্ঠিত ইয়াং টাইগার্স ইউ-১৬ জোনাল ক্রিকেট টুর্নামেন্টে অলরাউন্ডার মেঘ খেলছে পঞ্চগড়ের হয়ে। ধানমন্ডির শেখ জামাল ক্রিকেট একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে।

চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলায় ২০২১ সালের মার্চ মাসে র‍্যাবের তদন্ত কর্মকর্তা হাইকোর্টে অগ্রগতির প্রতিবেদন দিয়ে বলেছিলেন, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দুজন অপরিচিত ব্যক্তি জড়িত ছিল। সাগরের হাতে বাঁধা চাদর এবং রুনির টি-শার্টে ঐ দুই ব্যক্তির ডিএনএর প্রমাণ মিলেছে। অপরাধীদের শনাক্ত করতে ডিএনএ রিপোর্ট প্রস্ত্ততকারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুটি ল্যাব যথাক্রমে ইন্ডিপেনডেন্ট ফরেনসিক সার্ভিস এবং প্যারাবন স্ন্যাপশট ল্যাব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বর্তমানে যোগাযোগ অব্যাহত আছে। প্রতিষ্ঠান দুটি ডিএনএর মাধ্যমে অপরাধীর ছবি বা অবয়ব প্রস্তুতের প্রচেষ্টায় কাজ করে যাচ্ছে।

এদিকে, মামলার বাদী রুনির ছোট ভাই নওশের রোমান বলেন, এই মামলাটির তদন্ত নিয়ে এত পরিমাণ নাটক হচ্ছে যে এখনো তদন্তে দুজন অজ্ঞাত ব্যক্তির কথা বলা হচ্ছে। এখনো ডিএনএ নমুনার রিপোর্ট নিয়ে কথা বলছে। আসলে এখানে সরকারের আন্তরিকতার অভাব রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। র‍্যাব বা অন্য কোনো সংস্থা, যারাই তদন্ত করুক, আমরা বিচার চাই।

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ




raytahost-demo
© All rights reserved © 2020
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD